সড়ক সংস্কার : দুই শিশু সন্তান নিয়ে শিক্ষকের মানববন্ধন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় এক বছর আগে নির্মাণ হওয়া সড়কের বেহাল দশার কারণে সংস্কারের দাবি করে দুই শিশু সন্তানসহ এক শিক্ষক মানববন্ধন করেছেন। আসিফ ইকবাল(৩৫) নামের এক শিক্ষক জানান, মানববন্ধনের একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও শিশু–কিশোরেরা। সবাই একসঙ্গে দাবি তুলি, ‘আমরা সরাইল-অরুয়াইল সড়কের সংস্কার চাই।’
রোববার দুপুরে সরাইল-অরুয়াইল সড়কের পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর এলাকায় এই মানববন্ধন হয়।
তিনি অরুয়াইল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহেল আলীর ছেলে। তিনি কর্মরত আছেন অরুয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মানববন্ধনে ওই শিক্ষকের সঙ্গে অংশ নেয় তাঁর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আতিক ইকবাল (১০) ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আকিল ইকবাল (৬)।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, সরাইলের উত্তর প্রান্তে হাওড় এলাকায় ১১ বছর আগে নির্মাণ করা হয় সরাইল-অরুয়াইল সড়ক। উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় থেকে অরুয়াইল বাজার পর্যন্ত এ সড়কের দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার। এ পাকা সড়ক নির্মাণের ফলে উপজেলার কৃষিনির্ভর চুন্টা, পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়ন এবং নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ও কুন্ডা ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রামের ২ লক্ষাধিক মানুষের জীবনযাত্রায় নানা পরিবর্তন এসেছে। এটি তাদের একমাত্র সড়ক।
কিন্তু সড়কটি নির্মাণের পর প্রয়োজনীয় তদারকি ও সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে যায়। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গত বছরের জুন মাসে সড়কটির সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়। বাকি রয়েছে চুন্টা ইউনিয়নের ঘাগড়াজুর সেতু থেকে পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর বাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার অংশ। এ অংশটি পুরোপুরি হাওরের মধ্যে পড়েছে। তাই এ অংশটি প্রতিবছর ভাঙনের কবলে পড়ে। সড়কটির পাকা অংশের প্রস্থ ছিল ১২ ফুট।
জানা যায়, আড়াই কিলোমিটার অংশের দুই পাশে ভেঙে কোনো কোনো স্থানে এখন এর প্রস্থ আছে চার-পাঁচ ফুট। বাকি অংশ পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বিপরীতমুখী দুটি অটোরিকশাও অতিক্রম করতে পারে না। যানবাহন পাশের খাদে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সড়কের ভাঙন এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আগামী বর্ষার আগে সংস্কার করা না হলে বর্ষাকালে দুই লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শিক্ষক আসিফ ইকবাল একটি গণমাধ্যমকে জানান, ‘সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। সন্ধ্যার পর এই রাস্তায় যাতায়াত একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ে। চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে গেলে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। আসন্ন বর্ষার আগে সংস্কার করা না হলে সড়কটি বিলীন হয়ে যাবে। আমরা সড়কের এ অংশের সংস্কার চাই।’
এলজিইডির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী শিরাজুল ইসলাম বলেন, সরাইল-অরুয়াইল সড়কের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে মাঝখানের ঝুঁকিপূর্ণ আড়াই কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী বর্ষার পর আশা করি কাজ শুরু করা যাবে। এর আগে সম্ভব নয়।